Thursday, July 3, 2014

Key Note (National Integrity Strategy, Service Delivery & Good Governance) by Ataul Haque

জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়ননাগরিক সেবা প্রদান  সুশাসন প্রতিষ্ঠা নিশ্চিতকরণে সমন্বিত উদ্যোগ প্রহণের প্রয়োজনীয়তা

 মোঃ আতাউল হক
 যুগ্ম সচিব  পিডি, এফএসসিডিস্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

শুদ্ধাচারের ধারণা
শুদ্ধাচার বলতে সাধারণভাবে নৈতিকতা  সততা দ্বারা প্রভাবিত আচরণগত উৎকর্ষ বোঝায়। এর দ্বারা একটি সমাজের কালোত্তীর্ণ মানদন্ড, নীতি  প্রথার প্রতি আনুগত্যও বোঝানো হয়। ব্যক্তিপর্যায়ে এর অর্থ হল কর্তব্যনিষ্ঠা  সততাতথাচরিত্রনিষ্ঠা। ব্যক্তির সমষ্টিতেই প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি হয় এবং তাদের সম্মিলিত লক্ষ্যই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যে প্রতিফলিত হয়। প্রাতিষ্ঠানিকশুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠায়  ব্যক্তি পর্যায়ে শুদ্ধাচার অনুশীলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণসমন্বিত রূপ হিসেবে প্রাতিষ্ঠানিক শুদ্ধাচার অনুশীলনওজরুরি। রাষ্টীয় আইন কানুন  অন্যান্য প্রাতিষ্ঠানিক নিয়মনীতি  দর্শন এমনভাবে প্রণীত  অনুসৃত হওয়া প্রয়োজনযাতেএগুলি শুদ্ধাচারী জীবন প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হয়।

.১ শুদ্ধাচারশাসন  সুশাসনঃ
আমাদের প্রস্তাবনায় তিনটি বিষয়ের উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। বিষয়সমূহ হচ্ছে শুদ্ধাচার, সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং সুশাসনেরভিত্তিতে নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা। বাংলাদেশ গণপ্রজাতন্ত্রী অর্থাৎ জনগণ এদেশের মালিক। কাজেই সুশাসন পাওয়া এ দেশেরজনগনের সুযোগ নয়, অধিকার। এদেশের সর্ব্বোচ আইন সংবিধানের প্রস্তাবনায় বলা আছে যে, ‘গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এমন একশোষনমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠা হবে, ‘যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবংরাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হবে’। এ লক্ষ্য পুরনে সুশাসন প্রতিষ্ঠা রাষ্ট্রের অবশ্যকর্তব্য। আর সুশাসন প্রতিষ্ঠায় দুর্নীতি দমন ও শুদ্ধাচার প্রতিপালন একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য পরাকৌশল।
আবার শুদ্ধাচারী জীবন সুশাসন প্রতিষ্ঠার পূর্ব শর্ত কাজেই রাষ্ট্রীয় আইন কানুন  অন্যান্য প্রাতিষ্ঠানিক নিয়মনীতি  দন্ডএমনভাবে প্রনীত  অনুসৃত হওয়া প্রয়োজন যাতে এগুলি শুদ্ধাচারী জীবন প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হয়। ‘সুশাসন’ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ‘শাসনএর ধারনা আলোচনা করা দরকার| UNDP এর সংজ্ঞা অনুযায়ী Governance is the exercise of power or authority-political, economic, administrative or otherwise-to manage a country’s resources and affairs. It comprises the mechanisms, process and institutions through which citizens and groups articulate their interests, exercise their legal rights, meeting their obligations and mediate their differences.
বিশ্ব ব্যাংকের সংজ্ঞা অনুযায়ী ‘Governance` as the matter is which power is exercised in the managment of a Courtry’s economic and social resources for development.

১.১.২ সুশাসনঃ
    অপর পক্ষেসুশাসন বলতে বোঝায় ‘Existence-within states of political accountability, bureacratic transparencey, the exercise of legimate Power, freedom of association and Participation, freedom of information and expression, sound fiscal management and public financial accountability, respect for rule of law, a Predictable legal frame work encompassing an interdependent and credible judicial sytem, respect for human rights, and active legislature, enhanced opportunities for the development of pluralistic forces including civil society and capacity development. মোদ্দা কথা হল, ‘সুশাসন’ হচ্ছে জনকল্যাণে একটি দেশের বিষয়াবলী নিরসন  সম্পদের উন্মুক্ত,স্বচ্ছজবাবদিহিতামূলক  সম ব্যবহার নিশ্চিত করণ।
সুরেন্দ্র মুন্সীর মতে, Good governance signifies a participative manner of governing that functions in a responsible, accountable and transprent manner based on the principle of efficency, legitimacy and consensus for the purpose of promoting the rights of individual citizens and the public interest, thus indicating the excercise of political will for ensuring the material welfare of society and sustainable development with social justice (concern for good governance in comperative perpective, 2004, New Delhi).

..৩ জন প্রশাসনে নৈতিকতাঃ
          সমাজ কর্তৃক নির্ধারিত মানুষের আচরণচাহিদা  কর্ম সম্পাদনের মানদন্ড হচ্ছে নৈতিকতা। দার্শনিক দৃষ্টিকোন থেকেConcerned with the nature of uttimate value and the standards by which human actions can be judged right or wrong. Ethics refers to a Process through which moral standards are sought and in the practical application of moral ideas.
অপর পক্ষে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করে Civil Service  নিয়োজিত কর্মী বাহিনী। Civil Service কে আমরা বলতেপারি, It is a Product of Socity, Politics and economy. ‡mKvi‡b Civil Service Gi element এর মধ্যেঅর্ন্তভূক্ত আছে  

-আইনের শাসনের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকার;
-রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি অনুগত্যনির্বাচিত জন প্রতিনিধিদের দ্বারা প্রণীত নীতিমালা বাস্তবায়ন;
-প্রচলতি আইননীতিমালা  বিধি বিধানের নিরপেক্ষ প্রয়োগ;
-অনুরাগ  বিরাগের উর্দ্ধে থেকে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন এবং সকল ক্ষেত্রে জনস্বার্থ সংরক্ষণ;-নিয়মানুবর্তিতা  Chain of Command অনুসরণ;
-ব্যক্তিগত  প্রাতিষ্ঠানিক শুদ্ধাচার-স্বচ্ছতাজবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণসহ সকল প্রকার দুর্নীতির মুলৎপাটন।

১.২.১ শুদ্ধাচার কৌশল প্রণয়নের যৌক্তিক ভিত্তি

.দেশের প্রথম দ্বিতীয়দারিদ্র্য বিমোচন কৌশলপত্রেদুর্নীতিকে উন্নয়নের একটি প্রধান প্রতিবন্ধক হিসেবে চিহ্নিত করে প্রতিকারমূলক উদ্যোগের বিষয় বিবেচনা করা হয়েছিল। চলমান ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (অর্থ বছর ২০১১-২০১৫) সুশাসন দুর্নীতি দমনকে যথেষ্ট গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। দলিলটিতেদুর্নীতি নিয়ন্ত্রণশিরোনামের উপ-অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে সরকার দুর্নীতি সুরাহা করার গুরুত্ব স্বীকার করে এবং অধিকতর হারে-গভর্নেন্সযন্ত্রপাতি ব্যবহার, সিটিজেন চার্টারপ্রণয়ন, নাগরিকগণের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটিয়ে, সরকারের কর্মকান্ডকে অধিকতর স্বচ্ছ ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠা করে এবং তাদের তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার প্রদানের পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করে দুর্নীতির সুযোগ হ্রাস করার লক্ষ্যে ঐকান্তিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।  রূপকল্প ২০২১বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রণীতবাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০১০-২০১১দুর্নীতি দমনের উদ্যোগকে একটি আন্দোলন হিসেবে অভিহিত করে সরকারি কাজেজবাবদিহি স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠা’ , ‘স্বচ্ছ সংগ্রহ পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা’, ‘নৈতিকতা মূল্যবোধের উন্নয়ন সাধন’, ‘কার্যকর ন্যায়পালপ্রতিষ্ঠা এবংআইনশৃঙ্খলাপদ্ধতির উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উল্লিখিত পরিকল্পনাসমূহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেইসংগে একটি সমন্বিত সংহত পুরাকৌশল অনুসরণ করা হলে দুর্নীতি দমন অধিকতর কার্যকর হবে বলে প্রতীয়মান হয়।

খ.বাংলাদেশে জাতিসংঘের গৃহীত সকল নীতি ও কনভেনশনের প্রতি অব্যাহতভাবে সমর্থন প্রদান করে আসছে। বাংলাদেশের সংবিধানের ২৫ অনুচ্ছেদে উল্লিখিত আছে যে, ‘ আন্তর্জাতিক আইনের ও জাতিসংঘ সনদে বর্ণিত নীতিসমূহের প্রতি শ্রদ্ধা-এই সকল নীতি হইবে রাষ্ট্রের আর্ন্তজাতিক সম্পর্কের ভিত্তি.....।’ । জাতিসংঘের United Nations Convention Against Corruption (UNCAC) জাতিসংঘের একটি উল্লেখযোগ্য কনভেনশন এবং বাংলাদেশ তা অনুসমর্থন করেছে। উল্লিখিত কনভেনশনটিতে দুর্নীতি নির্মূলের জন্য ‘ফৌজদারি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ, আন্তর্জাতিক আইনের মাধ্যমে দুর্নীতির প্রতিকার ছাড়াও দুর্নীতির ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণকে’ সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এ কনভেনশনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘প্রত্যেক সদস্য রাষ্ট্র তার আইন-ব্যবস্থার মৌলিক নীতিমালা অনুযায়ী কার্যকর এবং সমন্বিত দুর্নীতিবিরোধী নীতি প্রণয়ন করবে যা সমাজের অংশগ্রহণকে উন্নত করবে এবং আইনের শাসন, জনসম্পদ এবং জনসংযোগের উপযুক্ত ব্যবস্থাপনা,সততা, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহি নীতির প্রতিফলন ঘটাবে’ (অনুচ্ছেদ ৫.১)। এ কনভেনশন বাস্তবায়নের বিষয়ে জাতিসংঘে প্রদত্ত বাংলাদেশ সরকারের প্রতিবেদনে গুরুত্বের সংগে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘বিবিধ অভ্যন্তরীণ পদ্ধতিগত দুর্বলতার সুযোগেই দুর্নীতির প্রসার ঘটে। ‘পদ্ধতিগত সেসব দুর্বলতা কাটিয়ে উঠা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধকে একটি কার্যকর ও গতিশীল আন্দোলন হিসাবে গড়ে তোলা হবে।

গ.তত্বগতভাবে বলা চলে যে, দেশের প্রচলিত আইনকানুন, প্রথা ও পদ্ধতি এবং উন্নয়ন উদ্যোগ দুর্নীতি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে এবং তা যথেষ্ট বলে বিবেচিত হতে পারে। কিন্তু, অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে যে,  সুষ্ঠু প্রয়োগের অভাবে এগুলির মাধ্যমে কাঙ্খিত ফল পাওয়া যাচ্ছে না। বিভিন্ন আইন ও কার্যক্রমের মধ্যে সমন্বয় সাধন এখানে বড় বাধা। রাষ্ট্র ও সমাজের বিভিন্ন পরিস্থিতিতে দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য বিভিন্ন আইন প্রণয়ন ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার প্রবর্তন করা হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে এগুলির মধ্যে সমন্বয় ও সামঞ্জস্য বিধান প্রয়োজন। অতীতে দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কার্যক্রম এত বিশাল এবং বিপুল ছিল না। সম্প্রতি কেবল সরকারি খাতই নয়, এনজিও খাত ও বেসরকারি খাতেও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের বিপুল প্রসার ঘটেছে। এ সকল কর্মকান্ডে বিপুল পরিমান সম্পদের সংশ্লিষ্টতা ঘটছে এবং পূর্বেকার সাংগঠনিক ব্যবস্থা ও পদ্ধতি এবং লোকবলের মাধ্যমে এগুলোর সুষ্ঠু বাস্তবায়ন কষ্টকর হয়ে পড়ছে। ফলশ্রুতিতে সরকারি-ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নের সংগে সংশ্লিষ্ট লোকজনের দুর্নীতির সুযোগও বৃদ্ধি পেয়েছে। সর্বোপরি, সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে দুর্নীতির প্রবণতাও বাড়ছে বলে প্রতীয়মান হয়। উল্লিখিত লক্ষ্য অর্জনের কৌশল হিসাবে এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ ও শুদ্ধাচার উৎসাহিতকরণের ক্ষেত্রে অব্যাহত কার্যক্রমের প্রতিনিধিত্বমূলক দলিল হিসাবে  সরকার ‘জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল’ প্রণয়ন করেছে।
১.২.২ জাতীয় শুদ্ধাচার ব্যবস্থা

ক. সমাজ ও রাষ্ট্রে দুর্নীতি নির্মূল ও শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা একে অপরের সংগে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। রাষ্ট্রি আইনকানুন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে। সমাজ তা প্রতিপালন করে, সেইসঙ্গে সমাজের নীতিচেতনা ও মূল্যবোধও রাষ্ট্রে প্রতিফলিত হয়। এ সম্পর্কের জটাজালে ব্যক্তিমানুষের নৈতিকতা ও শুদ্ধতার উন্নয়ন ও প্রতিষ্ঠা যেমন প্রয়োজন, তেমনি তার যুক্তরূপ প্রতিষ্ঠানগত শুদ্ধাচার উন্নয়ন ও প্রতিষ্ঠাও জরুরি। এ কৌশলটির চূড়ান্ত লক্ষ্য ব্যক্তিমানুষের শুদ্ধচার, অন্য কথায় চরিত্রনিষ্ঠা প্রতিষ্ঠা, কিন্তু এর হাতিয়ার হিসাবে প্রতিষ্ঠানকে বেছে নেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্র, বেসরকারি ব্যবসা খাত ও সুশীল সমাজের যেসব প্রতিষ্ঠান শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলে প্রতীয়মান হয়, শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ম-নীতির উন্নয়ন সাধন, ক্ষেত্রবিশেষে আইন ও পদ্ধতির পরিবর্তন এবং নতুন আইন ও পদ্ধতি প্রবর্তন, লোকবলের দক্ষতার উন্নয়ন এবং তাদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে কার্যকারিতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।

খ. একজন মানুষের নৈতিকতা শিক্ষা শুরু হয় পরিবারে এবং শুদ্ধাচার অনুসরণের ক্ষেত্রে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। তার পরের ধাপে আছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, নৈতিক জীবন গড়ার ক্ষেত্রে এর ভূমিকা অপরিসীম। এ প্রেক্ষাপটে শুদ্ধাচারের কৌশলে এগুলির ওপর জোর দেয়া প্রয়োজন। সরকারের নির্বাহী বিভাগের জনপ্রশাসন ও স্থানীয় সরকারসমূহ সরকারি কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু। এসব প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা প্রতিষ্ঠা এবং এগুলিতে নিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি প্রতিরোধ ও শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠা আবশ্যক। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ তিনটি অঙ্গে বিভক্ত-আইনসভা, নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগ। তারা স্বাধীন সত্তার তাদের কর্মবৃত্তে যথাক্রমে রাষ্ট্রের আইন প্রণয়ন, নির্বাহীকার্য ও বিচারকার্য পরিচালনা করে। সংবিধান অনুযায়ী গঠিত আরও কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেমন নির্বাচন কমিশন, মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়, সরকারি কর্ম কমিশন, ন্যায়পাল বাজেট ও আর্থিক নিয়মাবলি পালন সাপেক্ষে স্বাধীনভাবে কর্মসম্পাদনে ক্ষমতাবান। অন্য আরও কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যারা আলাদা আইনের মাধ্যমে সৃষ্ট এবং ‘সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ’ হিসাবে অভিহিত। যেমন, দুর্নীতি দমন কমিশন, তথ্য কমিশন, মানবাধিকার কমিশন ইত্যাদি। সংবিধানে স্থানীয় শাসনের যে ব্যবস্থা নির্দেশ করা হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে গ্রাম ও শহরের স্থানীয় শাসন প্রতিষ্ঠান যেমন, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ,পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশন সৃষ্টি করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন ও শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এসব প্রতিষ্ঠানের সকলের ভূমিকাকেই বিবেচনা করা জরুরি। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান যেমন অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে তেমনই রাজনৈতিক দল, গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ ও এনজিও এবং ব্যক্তিখাতের শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, সাকুল্যে অরাষ্ট্রীয় হিসাবে চিহ্নিত প্রতিষ্ঠানও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। সার্বিক বিচারে নি¤œবর্ণিত প্রতিষ্ঠানসমূহকে শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠার কৌশল বাস্তবায়নের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে;

রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ঃ নির্বাহী বিভাগ ও জনপ্রশাসন ২. জাতীয় সংসদ ৩. বিচার বিভাগ ৪. নির্বাচন কমিশন ৫. অ্যাটর্নি জেনারেল   ৬. সরকারি কর্মকমিশন ৭. মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্র্যালয় ৮. ন্যায়পাল ৯. দুর্নীতি দমন কমিশন ১০. স্থানীয় সরকার।
অরাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ঃ ১. রাজনৈতিক দল ২. বেসরকারি খাতের শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ৩. এনজিও ও সুশীলসমাজ ৪. পরিবার ৫. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৬. গণমাধ্যম।

১.২.৩ জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল
উল্লিখিত বিবেচনায় সরকার ইতোমধ্যে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন শুরু করেছে। এ কৌশলপত্রে রাষ্ট্রের রূপকল্প ও অভিলক্ষ্য ইতোমধ্যে নি¤েœাক্তভাবে নির্ধারিত হয়েছে ঃ

রূপকল্প ঃ সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলা।

অভিলক্ষ্য ঃ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠা।

২.১ প্রয়োগ কৌশল (নির্বাহী বিভাগ ও জনপ্রশাসন) ঃ
রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা, স্থানীয় শাসনব্যবস্থা, প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগ ও অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তর এবং মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর, সংবিধিবদ্ধ ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং এ সকল প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত বিপুল সংখ্যক সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা নিয়ে নির্বাহী বিভাগ গঠিত। নির্বাহী বিভাগের বেসামরিক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে জনপ্রশাসন। জনপ্রশাসনে নিযুক্ত কর্মকর্তাগণ যাতে স্বচ্ছতা ও নিয়মনিষ্ঠা পালন করে এবং দলীয় প্রভাব ও হস্তক্ষেপের উর্ধ্বে থেকে নাগরিকদের সেবা প্রদান করতে সক্ষম হয় তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরী। এ লক্ষ্যে জনপ্রশাসনকে উনত্রিশটি ক্যাডার সার্ভিসে বিন্যস্ত করা হয়েছে; কর্মকর্তা কর্মচারীদের কৃতি মূল্যায়নে এবং পদোন্নতি প্রদানে নতুন পদ্ধতি চালু করা হয়েছে, আর্থিক পারিতোষিক বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং পদ্ধতি ও প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন সংস্কার সাধন করা হয়েছে। জনপ্রশাসনে শুদ্ধাচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সর্বক্ষেত্রেই ‘আচরণ বিধি’ ও‘সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপীল বিধি’ প্রযুক্ত হয়। সরকারি কর্মকর্তাগণকে বর্তমানে ‘আয়কর আইনের’ বিধান অনুসারে আয়কর ও সম্পদের হিসাব প্রদান করতে হয়। দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যপরিধি সম্পূর্ণ জনপ্রশাসনে ব্যাপ্ত। জনপ্রশাসনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর দুর্নীতির বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সকল সরকারি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি দমন বিষয়ক পাঠক্রম অনুসৃত হচ্ছে।

২.১.২ বিগত সাড়ে তিন বছরে সরকার নিয়ম নীতি, পদ্ধতি ও আইনকানুনের সংস্কার সাধন করে সুশাসনকে জোরদার করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। নতুন আইন প্রণয়ন, তাদের সংস্কার ও পদ্ধতিগত উন্নয়নের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, বাজেট ও পরিকল্পনা খাতে ‘সরকারি অর্থ ও বাজেট ব্যবস্থাপনা আইন, ২০০৯ প্রণয়ন, ‘সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগকে মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামোর আওতাভুক্তকরণ, ‘কর্মকৃতিভিত্তিক নিরীক্ষা কার্যক্রম‘ চালুকরণ’ আর্থিক খাতে ‘মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২’ প্রণয়ন; সন্ত্রাসবিরোধী আইন (সংশোধন) ২০১২ প্রণয়ন, সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন (পাবলিক ইস্যু) বিধিমালা, ২০০৬ সংশোধন, শিক্ষা খাতে ‘শিক্ষা নীতি’ জারি স্বাস্থ্য খাতে স্বাস্থ্য নীতি’জারি। শিল্পায়ন উদ্যোগের ক্ষেত্রে ‘শিল্প নীতি ২০১০’ অনুমোদন, ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ প্রণয়ন; জলবায়ু ও পরিবেশ খাতে ‘বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ (সংশোধন) আইন ২০১০ জারি ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে জাতীয় আইসিটি আইন, ২০০৯ ও আইসিটি নীতিমালা, ২০০৯ প্রণয়ন, সকল ধরণের সরকারি ক্রয়ের জন্য ই-প্রক্রিউরমেন্ট ও ই-মনিটরিং ব্যবস্থা চালুকরণ; নারী ও শিশুকল্যাণ খাতে ‘জাতীয় শিশুশ্রম নীতি, ২০১০ জারি,সুশাসনের ক্ষেত্রে ‘তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ প্রণয়ন, ‘মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন, ২০১২ প্রণয়ন, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন, ২০১০ প্রণয়ন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯ প্রণয়ন ইত্যাদি। এসব আইন ও ব্যবস্থা সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে প্রভুত অবদান রাখছে।
২.২। উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানসমূহে দুর্নীতি দমন ও শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অব্যাহতভাবে তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করে চলেছে। এগুলিতে পদ্ধতিগত সংস্কারও সাধণ করা হচ্ছে। তবে বর্তমানে এসব কার্যক্রম ও সংস্কার উদ্যোগের মধ্যে সমন্বয় সাধন ও এগুলিতে একটি সম্মিলিত রূপ প্রদানের প্রয়োজন অনুভূত হচ্ছে। চিহ্নিত সকল প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে তাদের কৃত্য, কৃতি, বিবর্তন, বর্তমান অবস্থা ও তাদের চ্যালেঞ্জ তুলে ধরা হয়েছে এবং প্রত্যেকের জন্য আলাদা কর্মপরিকল্পনা বিধৃত করা হয়েছে। কর্মপরিকল্পনায় বাস্তবায়নকাল হিসাবে স্বল্পমেয়াদ (এক বছরের মধ্যে), মধ্যমেয়াদ (তিন বছরের মধ্যে) এবং দীর্ঘমেয়াদ (পাঁচ বছরের মধ্যে) চিহ্নিত করা হয়েছে। এই দলিলটিকে নীতিগতভাবে একটি বিকাশমান দলিল হিসাবে গণ্য করা হচ্ছে এবং এতে সময়ের বিবর্তনে এবং প্রয়োজনের নিরিখে নতুন সিদ্ধান্ত ও কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়নের সুযোগ রাখা হয়েছে।
২.৩।  মূলত জনপ্রশাসনের মাধ্যমেই সরকার এই কৌশলটি বাস্তবায়ন করবে। কৌশলটিতে রাষ্ট্রর অন্য দুটি অঙ্গ-বিচার বিভাগ ও আইনসভা, এবং সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের জন্যও কর্মসূচি প্রস্তাব করা হয়েছে। শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠার উচ্চ গুরুত্ব বিবেচনা করে এসব প্রতিষ্ঠান স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে চিহ্নিত পথরেখা অনুসরণে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জনপ্রশাসন এসব প্রতিষ্ঠানকে কারিগরি সহায়তা ও সম্পদ সরবরাহ করবে। সুশীল সমাজ ও শিল্প ও বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও জনপ্রশাসন সহযোগিতা প্রদান করবে এবং কার্যক্রম পরিবীক্ষণ করবে। শুদ্ধাচার কৌশলটি বাস্তবায়নের জন্য একটি‘জাতীয় শুদ্ধাচার উপদেষ্টা পরিষদ’ গঠন করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রিপরিষদের কয়েকজন সদস্য, কয়েকজন আইনপ্রণেতা, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন প্রতিনিধি, মন্ত্রিপরিষদ সচিব কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সচিব, এনজিও ও সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমে এবং ব্যক্তিখাতের শিল্প ও বাণিজ্যিক-প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন প্রতিনিধি সমন্বয়ে এই উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা হবে। সুশীল সমাজ, শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমের সদস্যগণ পরিষদে সরকার কর্তৃক মনোনীত হবেন। এই উপদেষ্টা পরিষদ বছরে অন্ততপক্ষে দু’বার সভায় মিলিত হবে এবং শুদ্ধাচার অনুশীলন পর্যালোচনা ও পরিবীক্ষণ করবে এবং এ সম্পর্কিত দিক নির্দেশনা প্রদান করবে। এই কৌশল-দলিলটির আওতায় চিহ্নিত কার্যক্রম বিকেন্দ্রীকৃতভাবে বাস্তবায়িত হবে। এতে চিহ্নিত দায়িত্বপালনকারী প্রতিষ্ঠানসূহ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে এবং সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ তাতে সহায়তা প্রদান করবে। প্রতি মন্ত্রণালয়ে নৈতিকতা কমিটি ও শুদ্ধাচার ফোকাল পয়েন্ট প্রতিষ্ঠা করা হবে। তারা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শুদ্ধাচার ও দুর্নীতি দমন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে এবং পরিবীক্ষণ করবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এই প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার সচিবালয় হিসাবে কাজ করবে এবং সার্বিকভাবে সকল কার্যক্রমের সমন্বয় সাধন করবে। দুর্নীতি দমন ও শুদ্ধাচারকে স্বীকৃতি প্রদান ও উৎসাহিতকরণের জন্য শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রবর্তন করা হবে। সেই লক্ষ্যে নির্বাহী বিভাগ, ব্যবসায় খাত ও সুশীল সমাজে শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নে যারা উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবেন, তাদের জন্য সরকার বার্ষিক পুরস্কার প্রবর্তন করবে।

উপসংহার
জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলে “সন্নিবেশিত বাণীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন ‘সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সে আলোকে আইন কানুন, নিয়ম নীতি, পরিকল্পনা ও বিভিন্ন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন অব্যাহত আছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠান জন্য কেবল রাষ্ট্রীয় নিয়মনীতি, আইন কানুন প্রণয়ন ও প্রয়োগ যথেষ্ট নয় তার জন্য নিরবিচ্ছিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা প্রয়োজন। প্রণীত কৌশল বাস্তবায়নে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, সুশাসন সমাজ ও বেসরকারী শিল্প ও বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান সমূহের সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন। সর্বোপরি প্রয়োজন জনগণকে তাদের অধিকার সম্পর্কে অবহিত করা। এবং সমগ্র কর্মকা-ে তাদের সম্পৃক্ত করা।

সরকারি দফতর ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার অতি সহজে বিভিন্ন কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে। ভূমি রেকর্ড, পুলিশের সাধারণ ডায়েরি, কারখানার মূল্য সংযোজনের হিসাব,শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি বা পরীক্ষার বিষয়, এ সকল ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার দুর্নীতি উৎপাটন করতে সক্ষম। সরকারি দপ্তর অথবা বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে তথ্য প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার দুর্নীতি প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালনে সক্ষম এবং অনেক ক্ষেত্রে তা সম্ভব করে তুলেছে। সেজন্য সরকার তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার দ্রুতায়িত করার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে এবং একর্মকা- বেগবান করা আবশ্যক। কাজেই আমাদের লক্ষ্য বাস্তবায়নে সর্বাধিক প্রয়োজন ছিল রাজনৈততিক অঙ্গীকারের। আনন্দের বিষয় এই যে, ইতোমধ্যেই আমাদের সরকার প্রধানের কণ্ঠে সুশান প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার ব্যক্ত হয়েছে। সেমতে প্রণীত হয়েছে কৌশল। কৌশলটি বর্তমানে বাস্তবায়ন পর্যায়ে রয়েছে। পাশাপশি চরিত্রনিষ্ঠা আনয়নের জন্য মানুষের জীবনের একেবারে গোড়া থেকে, পরিবার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। প্রতিষ্ঠা করতে হবে, রাজনীতিসহ জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে সুদ্ধাচার। অফিস আদালতসহ সকল সেবদানকারী প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য হবে highest satisfaction of my customer।

জনগণের মালিকানায় জনগণের সামগ্রিক সম্পৃক্তার মাধ্যমে গড়ে ওঠা আন্দোলন আমাদের পৌঁছে দিতে পারে অভিষ্ট লক্ষে। এ ক্ষেত্রে আবশিকভাবে প্রয়োজন সকল মিডিয়াসহ সকল সামাজিক মাধ্যম, প্রতিষ্ঠান ও নেটওয়ার্কের সক্রিয় অংশগ্রহণ।


সূত্র ঃ সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়, জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল,মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অক্টোবর/২০১২।